বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী ও চাহিদাভিত্তিক করতে একটি আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল অডিটরিয়ামে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই)-এর আয়োজনে “বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা” শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, “দেশকে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিতে হলে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার বিকল্প নেই। এ ধরনের শিক্ষাই দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, গত ৫২ বছরে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো গুণগত উন্নতি হয়নি। “আমরা এখনো একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে পারিনি। অথচ সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলো একসময় আমাদের সমান অবস্থানে ছিল, আজ তারা বহুগুণে এগিয়ে গেছে—এর পেছনে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার বড় অবদান রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যেই সিলেবাস পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ইআরআই চেয়ারম্যান সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলন বলেন, “কারিগরি শিক্ষাকে কখনো নিম্নতর শিক্ষা ভাবা যাবে না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এ শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।” তিনি সাংবিধানিকভাবে শিক্ষা কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন এবং মেধার যথার্থ মূল্যায়নের জন্য ট্যালেন্টপুল গঠনের আহ্বান জানান।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ কামরুল আহসান। তিনি শিল্প-অ্যাকাডেমিয়া সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চিকিৎসক প্রফেসর এ কে আজাদ এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সাঈদ ফেরদৌস। বক্তারা বলেন, যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে কারিগরি, প্রযুক্তিগত ও পেশাভিত্তিক শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গবেষণা সহযোগিতা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিল্প-অ্যাকাডেমিয়া সংযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সেমিনারে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ, নীতি নির্ধারক ও গবেষকরা অংশ নেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরআই-এর সদস্য সচিব সৈয়দ রেজওনুল কবির।